সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৯ অপরাহ্ন
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৯নং কলসকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী’র নেতা কর্মীদের উপর হামলা ও নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী ফয়সাল ওহীদ মুন্নার বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুর ১২টায় বরিশাল নগরের সদররোডস্থ বরিশাল কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন জেলা ও থানা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দরা।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল হোসেন খান বলেন,
শনিবার ১৭ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৯নং কলসকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সহযোগী বহিরাগত যুবলীগ, ছাত্র লীগ ও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতারা মিলে বিএনপি’র কার্যালয় ভাংচুর করে। এসময় ৮ টি মটর সাইকেল ও বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদার এর ছেলে কামাল, ও ভাইয়ের ছেলে মোঃ রাজাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। তাদেরকে উদদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাকেরগঞ্জের পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া, আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফয়সাল ওয়াহিদ মুন্না’র নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দোকান পাট ভাংচুর ও মারধর করে।
তিনি বলেণ, জাতীয় র্নিবাচনে সাধারন মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এরপর মেয়র র্নিবাচন, চেয়ারম্যান , মেম্বার নির্বাচনেও সরকার সাধারন মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। চার মাসের জন্য আয়োজিত নির্বাচনেও সরকার সাধারন মানুষের ভোট দিতে দিচ্ছেনা।
তিনি আরো বলেণ, পরিকল্পিত ভাবে সরকারের মনোনীত প্রার্থী ও দলীয় ক্যাডার বাহীনি বিএনপিকে পরাজিত করতে নিজেরা নিজেদের অফিস ভাংচুর করে তার দায় চাপাচ্ছে বিএনপি’র প্রার্থী ও সমর্থকদের উপর। উল্টো তারা আমাদের প্রার্থীকে হামলা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মীরা তিন চারশ মটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। অথচ নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। বিএনপি’র কার্যালয়ে ভাংচুর ও হামলার ঘটনায় থানায় মামলা ও নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এসময় তিনি সরকারের প্রতি একটি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর যাতে নেতাকর্মীরা প্রচার প্রচারনা করতে না পারে ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে সেলক্ষে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের প্রর্থীকে মামলা দিয়ে হয়রানি করতে চাচ্ছে। যত বাঁধাই আসুকনা কেন আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবো। সাধারন মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে শেষ রক্তটুকু দিয়ে হলেও আমরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করবো।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহীন, থানা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক নাছির হাওলাদার, মোফাজ্জেল হোসেন, জাহাঙ্গির আলম, গাজী শাহ আলম প্রমুখ।
এদিকে , বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শনিবার সন্ধ্যায় কলসকাঠী বাজারে এ ঘটনার সময় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল ওহীদ মুন্না অভিযোগ করে বলেন, কলসকাঠী বাজারে তাদের শেষ নির্বাচনী প্রচার মিছিলে হামলা চালিয়েছে বিএনপি কর্মীরা। এসময় তারা আওয়ামী লীগ অফিস ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেন। হামলায় আওয়ামী লীগের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।
বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদার অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াতলিতে একটি নির্বাচনী সভায় থাকার সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা কলসকাঠী বাজারে নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করছেন বলে খবর পান। খবর পেয়ে তার কর্মীরা কলসকাঠী বাজারে গেলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে তিন জন আহত হলে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে পুলিশের অনুরোধে তিনি কর্মীদের নিয়ে বাজার ত্যাগ করে সভাস্থলে ফিরে আসেন।
আগামী ২০ অক্টোবর ইউনিয়নটিতে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। তিন মাস আগে মনু তালুকদারের মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়।